প্রতারণা করে দেশের সুনামধন্য সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান বিগব্যাগ কম্পিউটারস লিমিটেডের প্রায় ২০ কোটি টাকার সফটওয়্যার চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে শাহজালাল শাহিন নামে একজন ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে। প্রথমে জিডি এবং পরবর্তীতে মামলা করায় শুক্রবার তেজগাঁও থানা পুলিশ তাকে মিরপুর মডেল থানার সহায়তায় মিরপুর মনির উদ্দিন মার্কেট থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে জামিন না দিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠায় আদালত।
আটক শাহজালাল শাহিন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার আজমপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল শাহিন বিগব্যাগ কম্পিউটারস লিমিটেডে প্রায় দশ বছর ধরে সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার মাধ্যমে বিগব্যাগ কম্পিউটারস লিমিটেড প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানে বিক্রিয়ত্তর সেবা প্রদান করত। গত ১৭ অক্টোবর অফিস দুপুর দেড়টার দিকে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের সফটওয়্যার, সফটওয়্যারের সোর্সকোড এবং নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা চুরি করে পালিয়ে যান। তার সাথে ওই অফিসের কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করলে তাতে তিনি সাড়া দেননি। পরবর্তীতে বিগব্যাগ কম্পিউটারস লিমিটেডের পক্ষ থেকে তেজগাঁও থানায় জিডি করা হয় এবং বেসিসে (বাংলাদেশে সফটয়্যার এসেসিয়েসন) অভিযোগ করা হয়। সবশেষ ৫ ডিসেম্বর মামলা করা হয়। বিগব্যাগ কম্পিউটারস লিমিটেডের জিএম মাহবুবুর রহমান জানান, ‘শাহজালাল শাহিন বিগব্যাগ কম্পিউটারস-এ দশ বছর যাবত চাকরি করেছেন। চাকরিরত অবস্থায় তার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ল্যাব ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের বিক্রয়ত্তোর সেবার জন্য প্রায় অর্ধ শতাধিক হসপিটাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হতো। আমরা জানতে পেরেছি, সে আমাদের এখানে কর্মরত অবস্থায় এই সফটওয়্যার বিভিন্ন জায়গায় চুরি করে বিক্রি করেছে এবং অর্থ আত্মসাত করেছে। একই সঙ্গে তার মাধ্যমে সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান সফটওয়্যারগুলোর সোর্স কোড বুঝিয়ে না দিয়ে বেশকিছু সফটওয়্যার চুরি করে নিয়ে যায়। সোর্স কোড বুঝিয়ে না দেওয়ায় হাসপাতালে চলমান সফটওয়্যারগুলো অধিক অর্থ ব্যয় করে বিকল্প পদ্ধতিতে চালানো হচ্ছে। সোর্স কোড বুঝিয়ে না পেলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে অনেক হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাব ও বিগব্যাগ কম্পিউটারস লিমিটেড।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সফটওয়্যার কপি রাইট করা। আমরা গণমাধ্যমকে অনুরোধ করতে চাই, যে কোন প্রতিষ্ঠান যেন তার নিকট থেকে এই সফটওয়্যার ক্রয় এবং সেবা যেন গ্রহণ না করে ও প্রতারণার শিকার না হয়। তার মাধ্যমে সফটওয়্যার ক্রয় এবং সেবা গ্রহণ করে ক্ষতির সম্মুখীন হলে বিগব্যাগ কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না এবং কোন প্রতিষ্ঠান যদি তার কাছ থেকে সফটওয়্যার নেয়, তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’